বাগান থেকে সমন্বিত উপায়ে কীটপতঙ্গ দূরীকরণ – দ্বিতীয় পর্ব

সমন্বিত কীটপতঙ্গ দূরীকরণের প্রথম যে আর্টিকেলটি ছিল সেটি আমরা দেখেছি বাগান করার মৌলিক কৌশল হিসেবে সমন্বিত কীটপতঙ্গ কি এবং কতটা প্রভাব ফেলে। এখন আমরা দেখব সমন্বিত কীটপতঙ্গ দূরীকরণের জন্য যে ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয় সেগুলো কি

প্রতিরোধ

অর্গানিক বাগান তৈরীর সময় অর্ধেক যুদ্ধ আগেই জিতে যাওয়া যায় যদি প্রথমেই বাগানে কীটপতঙ্গ এবং অসুখ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেজন্য প্রতিনিয়ত গাছপালা কে পর্যবেক্ষণ করতে হবে, এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি রয়েছে সেগুলো পরিষ্কার করতে হবে, অপ্রয়োজনীয়’ আগাছা এবং ঘাস তুলে পরিষ্কার রাখতে হবে। এছাড়া বাগানে পানি ব্যবহার করার সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। বাগান তৈরীর সময় এ কাজগুলো ঠিকঠাক মতো করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে শুরুতেই পরিত্রান পাওয়া যায়।

গাছপালা নিরীক্ষণ

বাগান করার আগে আপনাকে শুরুতেই গাছপালাতে কি ধরনের কীটপতঙ্গ আক্রমণ করে সে সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। এবং গাছপালা নিরীক্ষণ এর উপর রাখতে হবে। আপনি যদি কি ধরনের কীটপতঙ্গ গাছে আক্রমণ করতে পারে সেটি জেনে রাখেন তবে যখন বাগানে কীটপতঙ্গ দেখতে পাবেন তখন এটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে। সেজন্য কি ধরনের পতঙ্গ কোন গাছে হবে সে সম্পর্কে জ্ঞান রাখা প্রয়োজন।

পদ্ধতিগত পরিবর্তন

বাগান করার সময় কিছু বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। যেমন এক বছর কোন এক ধরনের শস্য যদি উৎপাদন করা হয় তবে পরবর্তী বছর যেন অন্য ধরনের কোন শস্য সে জায়গায় লাগানো হয় সেদিকে খেয়াল রাখা। কারণ এতে করে একই বছর একই প্রজাতির শস্যে যেন একই কীটপতঙ্গ আক্রমণ না করে তা নিশ্চিত করা যায়। এবং এর ফলে কীটপতঙ্গ জনিত সমস্যা গুলো কমিয়ে আনা যায়।

যান্ত্রিক কৌশল

আপনি আপনার বাগান করার সময় সর্বপ্রথম কীটপতঙ্গ যেন আপনার গাছের কোন অংশে আক্রমণ করতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে বিশেষ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় গাছ-পালা গুলোকে একটি বিশেষ বস্তু দিয়ে ঢেকে দেয়া অথবা গরম পানি, বাতাস, আগুন এবং দিয়ে ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ গুলোকে মেরে ফেলা। এতে করে আপনাকে কোন ধরনের বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করতে হবে না। এমনকি সাবান-পানি যুক্ত তরল দিয়ে কীটপতঙ্গ গুলোকে কুপোকাত করতে পারবেন।

জৈবিক নিয়ন্ত্রণ

প্রতিটি প্রাণীরই একটি প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। প্রকৃতির এই প্রাকৃতিক নিয়ম কে ব্যবহার করে বাগান করার সময় আপনি লাভবান হতে পারেন। ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ গুলোকে ধ্বংস করার জন্য অন্য আরো বেশ কিছু পতঙ্গ রয়েছে। আপনি চাইলে আপনার বাগানে এ ধরনের উপকারী কীটপতঙ্গ যেমন শুয়োপোকা সহ আরও বিভিন্ন ধরনের পতঙ্গ ছাড়তে পারেন যেগুলো ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ কে ধ্বংস করবে এবং আপনার বাগানকে নিরাপদ রাখবে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ 

রাসায়নিক পদার্থগুলো বাগান তৈরি করার সময় হওয়া উচিত শেষ পদক্ষেপ। এবং রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করলেও যেন সবচেয়ে কম বিষাক্ত পদার্থ ব্যবহার করা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাগান তৈরির সময় যদি কখনো রাসায়নিক পদার্থ যেমন কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় তবে এমন ধরনের পদার্থ ব্যবহার করতে হবে যেন তা শুধু মাত্র ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ কেই আক্রান্ত করে। বাগানের পরিবেশ রক্ষার্থে অন্য কোন গাছপালা বা প্রানীর যেন ক্ষতি না করে এই রাসায়নিক পদার্থগুলো সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এই পদ্ধতি বা ধাপগুলো অবলম্বন বাগান তৈরীর সময় একটি অন্যতম মৌলিক কৌশল হিসেবে সমন্বিত পদ্ধতিতে কীটপতঙ্গ দূর করা সম্ভব

Leave a Comment